বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৭

ফেসবুক কি সাহিত্যের ক্ষতি করছে?


ফেসবুক কি সাহিত্যের ক্ষতি করছে? 

কেন বলুন তো এসব নিয়ে ভাবছি আমরা? আমরা যারা সাহিত্যকর্মী, ভাবনাটাই আমাদের একমাত্র সম্বল আর সেই মস্তিষ্কপ্রসূত ভাবনাচিন্তাগুলোকে কলমের মধ্যে দিয়ে জীবন্ত করাটাই আমাদের কাজ। ফেসবুক হল মত প্রকাশের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। সকলে কি আর প্রিন্ট পত্রপত্রিকার দয়া দাক্ষিণ্যে মত প্রচার করতে পারে? সেই আম জনতার স্বাধীন মতপ্রকাশের মুক্তাঙ্গন হল ফেসবুক। ফেসবুক আসার আগে বহু মানুষ কিন্তু নিজেদের ডায়েরীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতেন। ফেসবুক তাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছে। বহু মানুষ তাদের লেখা পড়ে মতামত দিচ্ছে, তাদের লেখা শেয়ার করছে। ফলে লেখাকের পরিচিতি বাড়ছে। এবার আসি কোর সাহিত্যচর্চা বা কবিতা, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি প্রসঙ্গে। ফেসবুকে অনেকেই কবিতা, ছড়া, অণুগল্প, ধারাবাহিক উপন্যাস লেখেন। সেগুলি কিন্তু লেখকের নিজস্ব ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি। সেই লেখা কিন্তু চুরি হয়েছে, বহুবার দেখেছি। সেই লেখা ফেসবুক থেকে কপি পেস্ট হয়ে ব‌ই সংকলনে বেরিয়েছে তাও দেখেছি। সেটাই বোধহয় নিন্দনীয়। তবে ফেসবুকের মাধ্যমে একজন লেখক যে পরিচিতি পান একছাদের নীচে, বহু মানুষের সামনে সেটা কিন্তু খুব সত্যি কথা। ফেসবুক আছে বলে নতুন সাহিত্যসৃষ্টি হচ্ছে। সাহিত্যের ক্ষতি হচ্ছে, এ কথা আমি মানতে নারাজ। সাধারণ মানুষের কাছে ফেসবুক মানেই ইন্টারনেট। সেটাই দুঃখের। ফেসবুক ছাড়াও যে ইন্টারনেট দুনিয়ার একটা বিশাল ব্যাপ্তি আছে সেটাই আমরা জানিনা বা বুঝিনা। আর ফেসবুক সাহিত্যের ক্ষতি করলেই বা কি, না করলেই বা কি? আমরা যারা লেখালেখি করি ইন্টারনেটের হাত ধরে যেমন ফেসবুকে, ব্লগে , ওয়েব পত্রিকায় লিখি তেমনি লিখে যাব। আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। 


এই নিয়ে আলোচনায় থাকছেন অনেকেই ২৪, অশ্বিনী দত্ত রোডে, শরতচন্দ্রের বাসভবনে।(উপরের কার্ডে বিশদ দ্রষ্টব্য)
আর আপনিও আপনার মতামত জানাতে পারেন, ফেসবুকে এবং এই ব্লগপোষ্ট এ ।
২০০ শব্দের মধ্যে লেখা উত্কৃষ্ট মতামতগুলি প্রকাশিত হবে প্যাপিরাস পয়লা বৈশাখ ২০১৭ সংখ্যায়। আর হ্যাঁ, ব্লগে কমেন্টের সাথে আপনার ছোট্ট পরিচিতি দিতে ভুলবেন না।

১০টি মন্তব্য:

  1. “সাহিত্য” বিষয়টি প্রায় প্রাকৃতিক ব্যাপার বলে মনে হয় আমার। সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গেই তার উদ্ভব হয়েছিল। সংস্কৃতি যেমন জীবন যাপনের মধ্য থেকে গড়ে ওঠে সাহিত্যও তাই। আদিকাল থেকে আজও যখন সদর্পে সে বিরাজমান তখন ফেসবুক কেন কোন শক্তিই তাকে মুছে দিতে পারবে না। দেখুন চায়ের আড্ডাতেও খেয়াল করে দেখবেন এক দুজনই মূল বক্তা বাকী সবাই শ্রোতা থাকে। কথা না জানলে আড্ডা জমে উঠবে কার হাত ধরে! ফেসবুকে কোটি কোটি লোক, তাতে লেখেন কজন? ক’শো ক’হাজার? লিখুন না, আরো বেশি করে লিখুন। লিখবেন দশ লাইন পড়বেন একশ জন। এ সুবিধে কি কম? কটা বাংলা দৈনিক বেরোয় আর তাতে কটা করেই বা পাতা থাকে? স্বজন পোষণের কথা বাদ দিলেও সংখ্যার কারণেই তো অধিকাংশের লেখা ছাপানো যায় না। তো সেই লেখক করবেন কি? তাই সে ফেসবুকে লেখে। সেখানে লেখার কোন প্রবেশিকা নেই বলে যারা সমানে গলা শুকান তাদের বলি এখানেও যার লেখায় গভীরতা ও মুন্সীয়ানা আছে সে পাঠকের মনে স্থায়ী জায়গা করে নিতে পারবেই। খবরের কাগজের সব লেখার কি সাহিত্যমূল্য থাকে? কিন্তু সংবাদে চোখ বোলানোর ফাঁকে অজান্তেই আমরা কোন বিশেষ লেখকের লেখার অপেক্ষা করতে থাকি পরের ইস্যুর জন্য। ফেসবুক তো টিভির মতই বিশ্ব দর্শনের টিকিট নিয়ে আছে। তাকে কোন মুন্সীয়ানায় কাজে লাগাবেন সেটায় আপনার কেরামতি। ফেসবুককে দোষ না দিয়ে চ্যালেঞ্জটা নিনই বরং লেখক।

    উত্তরমুছুন
  2. সাহিত্য মানে যাহা সবার হিতে কাজে আসিবে আগামী প্রজন্মে। তবে সাহিত্য পড়িবার অভ্যাস নিজের মধ্যে রাখিতে হইবে। সুন্দর সাহিত্য ফেসবুকের ঘায়ে মূর্ছা যাইবে কোন দুঃখে ? তবে ফেসবুকের পদার্পর্ণের আগে বিখ্যাত কবিদের রচনাবলী গুলি বহিঃকক্ষের আলমারিতে শৃঙ্খল বদ্ধ ভাবে দাঁড়াইয়া মনিবের গৃহ মালিকের সাহিত্য প্রেম বয়ান করিত। বহিরাগত কেউ আসিলে সেই সব রচনাবলীর সংগ্রহ দেখিয়া যারপরনাই প্রফুল্লিত হইতেন। ফেসবুকের কল্যানে বাংলা ভাষা জানা মৃতপ্রায় কিছু মানুষ প্রতিদিন ভাষাটির চর্চা করিতেছেন এটিই বড় পাওয়া।

    উত্তরমুছুন
  3. আমার কাছে ফেসবুক একটি সাহিত্যে প্রকাশ এর মাধ্যম ছাড়া কিছু নয়। যেমন গ্লাসে করে জল খাওয়া যায়, একটা মাঠ থাকলে বাচ্চা রা খেলে, সুন্দর জায়গায় লোক বিকেলে বেড়াতে ভালো বাসে আমি তেমনি ফেসবুকে লিখি। আসলে সত্যি আমি ফেসবুকে লিখে থাকি। মফম্বলের মানুষ হয়েছি আমার পক্ষে মুল সাহিত্যের মাধ্যম অর্থাৎ ছাপা কাগজ বা পত্র পত্রিকার বা সাহিত্যিক দের কাছ থেকে মূল্যবান দিক নির্দেশ পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু প্রচুর সাহিত্যিকের রচনা পরে এক্তু লেখার ইচ্ছে হওয়া…। এই জায়গা টা ফেসবুক আমার মত বহু সাধারন কে সাহায্য করেছে। সাহিত্য চর্চা হয় যে সমাজে সেখানে মানুষ একটু অন্য রকম ভাবে বাঁচে। এটা সাহিত্য চর্চা কে ক্ষতি করছে বলে মনে হয় না। কারণ আমি একাই দুকলম পদ্য লিখতে পারি এই অহমিকা এখানে দূর হয়। যে লেখা টা কেউ কোন দিন হয়ত পড়ত না আমি কবি না হলেও সেটা কেউ পড়ে। আমি এখানে প্রচুর প্রচার সক্ষম কলম শিল্পীদের যেমন পাই। আবার কত সাধারন মানুষ কি অপূর্ব রচনা করে নির্মোহ ভাবে থাকেন… সেটাও পাই। সাহিত্যের উন্নতির জন্যে খুব দু ধরনের মানুষরা স্বাভাবিক অনুঘটক। আমার কাছে এই অনলাইন সাহিত্য চর্চা ভালো… ক্ষতি কারক নয়।

    উত্তরমুছুন
  4. ফেসবুককে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে অনেক সম্ভাবনাময় লেখক লেখিকা প্রথম সারিতে উঠে এসেছেন সেটা অনস্বীকার্য। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম হবার সুবাদে খুব সহজেই অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া যায় নিজের লেখনী নিয়ে। তার মধ্যে গুণগত মানের নিরিখে অনেক লেখাই নামিদামি পত্রপত্রিকার প্রকাশিত লেখার থেকেও অনেক উন্নতমানের সেটাও সময়ে অসময়ে দেখেছি। বেশ কিছু প্রথিতযশা লেখককেও দেখেছি ফেসবুকে তাঁদের লেখা পোস্ট করতে। করবেননাই বা কেন! জনমানসে সহজে পৌঁছানোর এর চেয়ে ভালো কোনো উপায় আছে বলে তো আর মনে হয়না। কপি পেস্ট করে চুরি বা তা ছাপিয়ে বই বের করে ক্রেডিট পাওয়া সেসব প্রসঙ্গে আমি যেতে চাইনা, ওগুলো কুরুচিকর কাজ এবং সবাই সেটা করেননা। তবে আমার বক্তব্য একটাই, যাঁরা লেখালেখি করেন তাঁরা বেশিরভাগ-ই শিক্ষিত এবং বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত সৎবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ। যেহেতু একটা পোস্টের মাধ্যমে একবারেই সমাজের বহু মানুষের কাছে পৌঁছানো যায় কাজেই তাঁরা যদি সংযত লেখা না লেখেন, লেখা যদি হয় প্ররোচনামূলক তাহলে সেই লেখা তৎক্ষণাৎ দাবানলের মতন ছড়িয়ে সমাজের শান্তি বা স্থিতি নষ্ট করে। ভাষার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশের অধিকার আমাদের অবশ্যই ছিল, আছে বা থাকবে কিন্তু লেখক হিসেবে ফেসবুকের মতন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মে লেখার জন্যে লেখককে অনেক বেশি দায়িত্বশীল হতে হয়।

    উত্তরমুছুন
  5. যদি গল্প, কবিতা, রম্যরচনা ইত্যাদি লেখা(যাকে এক কথায় সাহিত্যের আঙিনায় বিচরণ বলে) এবং অন্যকে পড়ানোর ইচ্ছে জাগে আর তা করতে সমভাবাপন্ন বন্ধু ক’জন মিলে ২-৩ ফর্মার পত্রিকা প্রকাশ সাহিত্যের ক্ষতির কারণ হয়, তাহলে ফেসবুক বেশ ভারিক্কী চালেই সাহিত্যের ক্ষতি করছে। রোজ ফেসবুকে রাশি রাশি সাহিত্য কর্ম প্রকাশ পাচ্ছে—ইচ্ছে বা আবেগ এলেই হলো—কীবোর্ডে আঙুল আর কিছু পরেই প্রোফাইলের দেয়ালে সেই সদ্যজাতকে ঝুলিয়ে দেওয়া। যাঁরা পন্ডিত-- দেখে, শুঁকে, টিপে রায় দিলেন, নাঃ, লেখাটার কিস্যু হয় নি। দু’চারজন দয়ালু হয়ত বললেন দৃশ্যকল্প বা প্লটটা ভালই ছিল কিন্তু ঠিক করে বাঁধতে পারে নি। অতএব তা অসাহিত্য বা কুসাহিত্য। দু’চারটে আলু পচা মানেই পাল্লার সব আলু বাতিল! এদিকে যারা লিখতে চাইছে তাদের পক্ষে অভিজাত পত্রিকায় চান্স পাওয়া তত সহজ নয়—আর ছোট পত্রিকায় ৪০/৬০টা কবিতা, দুটি গল্প, একটি ভ্রমণ কেন্দ্রিক লেখা, খুব ছোট একটি নিবন্ধ স্থান পেতে পারে, পরের সংখ্যা অনিশ্চিত, হয়ত ছয় মাস পর।
    এই সময়ে হাতে এসে গেল ফেসবুক- যাকে আন্তর্জালিক ম্যাগও বলা যায়, যা কার্যত অবাধ লেখার অগাধ স্ক্রীন। স্বসম্পাদিত লেখাটি ঝুলিয়ে দিলেই হলো। কিছু পাঠকের ভাল লাগতেও পারে তা। কিন্তু, পরে সেই লেখাটির কথা মনে না পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। আসলে ‘সাহিত্য’ বড়ো কঠিন ঠাঁই—সে ক্রমাগত বর্জন করতেই থাকে। রাশি রাশি লেখা তাকে বিচলিত করতে পারে না।
    তাই ফেসবুক অনেকের লেখার সুযোগ করে দিয়েছে বটে, তবে সাহিত্যের ক্ষতি করার ক্ষমতা তার নেই।

    উত্তরমুছুন
  6. খুব বড় করে দেখলে, ফেসবুক সাহিত্যের ক্ষতি করছে না।ফেসবুকের খোলা দেওয়ালই একাধিক মানুষকে নিজেদের কথা লেখার, কথা বলা সাহস জুগিয়েছে,বা জায়গা দিয়েছে ।লিখতে লিখতে নিজের ওপর আস্থা বাড়ছে। সমমনস্ক লেখক এবং পাঠকদের কাছ থেকে মতামত পাওয়া যাচ্ছে। এইভাবে আমরা অনেকেই নিজেদের লেখার ঘরানা খুঁজে পেয়েছি বা পাওয়ার চেষ্টা করছি।এছাড়াও,একই সাথে বহু খ্যাতনামা এবং স্বল্পপরিচিত লেখকদের সাথে আলাপ,ভাবনা চিন্তার আদান-প্রদানেরও একটা সুযোগ থাকে।নানাধরনের লেখা পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়।আজকের দিনে যখন সবার হাতেই সময় সীমিত এবং সশরীরে উপস্থিত হওয়ার সুযোগও সর্বদা মেলেনা, তখন ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপগুলি একেকটি ভার্চুয়াল সাহিত্যচর্চার ক্লাবের মত হয়ে উঠেছে।যাঁরা লেখেন না, কিন্তু বিবিধ লেখা পড়তে ভালবাসেন, তাঁদের জন্যেও ফেসবুক নিয়মিত নানাস্বাদের সাহিত্যধর্মী রসদের যোগান দিচ্ছে।তাই বলা যেতে পারে, বিভিন্ন স্বাদের লেখালিখি পড়ার জন্যেও কিছু অন্তত নতুন পাঠক তৈরি হচ্ছে।

    তবে ফেসবুক তো আদতে প্রত্যেক ব্যবহারকারীর ডিজিটাল খোলা খাতা।সেই খাতায় প্রত্যেকেই নানাভাবে নিজের মত এবং বক্তব্য প্রকাশ করতে পারেন।ফেসবুকে কোন লেখাই ব্যক্তিগত নয়।পোস্ট দেওয়ামাত্র 'লাইক' সংখ্যার নিরিখে সেই লেখার গুণগত বিচার শুরু হয়ে যায়।বলতে বাধা নেই, সেই বিচার বা জনপ্রিয়তা সবসময়ে যথার্থ মূল্যায়ন করে না।অনেক সময়েই শুধুমাত্র লেখকের নিজস্ব জনসংযোগ এবং ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার ভারে সঠিক বিশ্লেষণ পেছনের সারিতে চলে যায়।তাই হুজুগে না মেতে কোন রচনার সাহিত্যমূল্য আছে আর কোন রচনার নেই, সেটার সঠিক নির্ধারন করা লেখক এবং পাঠক,দু-তরফেই প্রয়োজন।

    উত্তরমুছুন
  7. বাহ্! জমে উঠেছে আমাদের ডিজিটাল বিতর্ক সভা।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. বিরোধী পক্ষের কলমবাজি কই? আমরা তো বেড়ে খেলছি-- দু'একটা ঘুড়ি আসুক, লড়াই দিক-- তবে না জমবে!

      মুছুন

  8. এই মুহুর্তের যা ফেসবুক-ভার্সন, তা "নতুন লেখক লেখিকাদের" সুযোগ দিলেও বেসিক্যালী "সাহিত্যের" ক্ষতি করছে বলেই মনে হচ্ছে। বাংলা ফন্ট ডাউনলোড করে বাংলায় লিখতে পারা যাচ্ছে বলে যা খুশি মনের বকম বকম উগরে দেবার প্রবনতা দেখা যাচ্ছে। আর পপিচু ধর্মে দীক্ষিত মানুষ সেসব অনেক লেখাই 'লাইক' মেরে যাচ্ছে বা 'আহা কি ভালো' নামক ষ্ট্যাম্প মেরে যাচ্ছে লেখাটি অনেকসময় না পড়েই! এতে সাহিত্যের কোনো উপকার হচ্ছেনা। ইন্টারনেট একটি যুগসন্ধিক্ষন। পাথর-তামা-লোহা পেরিয়ে এই ওয়েব যুগ একটি বিশাল সম্ভাবনা ও তার হাত থেকে পালিয়ে যাবার রাস্তা নেই। সময়ের ট্রেন্ড বলছে প্রিন্ট পত্রিকাগুলোর স্থায়ীত্ব আর বেশিদিন থাকবেনা (যতই আমরা আবেগে থলো থলো হই, কান্নাকাটি করি)। ওয়েবেই জন্ম নেবে নতুন পত্রিকা, বিখ্যাত পত্রিকাগুলো ওয়েবেই নিজেদের পাঠক (সাবস্ক্রাইবার) সংখ্যা বাড়াবে। কারন প্রিন্ট পত্রিকার চেয়ে ওয়েব পত্রিকার খরচ কম অথচ পাঠক বেশি পাবার সম্ভাবনা। কথায় কথায় কোলকাতার বাইরের বাঙালী পাঠকের সেন্টু না তুলে দেখতে হবে রিয়েলিটি। ঠিক এই মুহূর্তে যে যৌবন বেড়ে উঠছে কোলকাতা শহরের বাইরের মফস্বলে, সেখানেও ইন্টারনেট যুগ শুরু হয়ে গেছে। সুতরাং "ইন্টারনেট" ই আগামী যুগে সাহিত্য প্রকাশের প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু এই ফেসবুক হলো ইন্টারনেট ব্যাবহার করে মার্ক জুকেরবার্গ নামক এক বুদ্ধিমান মানুষের একটি ব্যবসা মাত্র। একটি কথা বলার দেওয়াল দিয়েছেন উনি। লোকে দিনরাত গোবর লেপে যাচ্ছেন সে দেওয়ালে। কখনও ছবি-ছবা, কখনো হয়ত ভালো কিছু লেখাও, কখনও নিজেদের বিজ্ঞাপন। কিন্তু সেসব দেওয়াল খুঁজে সৎ সাহিত্য খুঁজে বের করা বেশ কঠিন। যে পাঠক তেমন কিছু পড়েনি, বা ওই টুকটাক পূজো সংখ্যা টাইপ বাজারে কিছু গপ্পো উপন্যাস কবিতা পড়েছে, সে হাতের কাছে গাদা গাদা বাংলা লেখা দেখে ভাববে সে যা পড়ছে সেই বোধ হয় সাহিত্য! ফলে ট্র্যাশ কোনো লেখালেখি বা চটজলদি জমকালো সুড়সুড়ি দেওয়া স্মার্ট লেখাও পাঠক-লাইকে মহান হয়ে যাবে, যাচ্ছে! আর যেগুলো সত্যিই সাহিত্য, যা পড়তে পাঠককেও খানিক দীক্ষিত হতে হয়, সেগুলো কিন্তু 'লাইক'শূন্যই থেকে যাবে অনেকটাই। ফলে আমি সেই ইন্টারনেট ও ওয়েব সাহিত্যের পক্ষে, যেখানে একটি এডিটর প্যানেল থাকবেন লেখা সিলেকশনের এবং সেই লেখাগুলোই অনলাইনে আসবে যার সাহিত্যগুন আছে। কিন্তু ফেসবুক-সুলভ বেশিরভাগ লেখার নয়, যা বেসিক্যালি হালকা চটুল ফাজলামি, বিজ্ঞাপনী মাহাত্ম আর গোবর ছাড়া তেমন কিছুর অনুকূল নয়!

    উত্তরমুছুন
  9. ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য সুখ-দুঃখ, আনন্দ-কষ্ট, ভালোবাসা-ঘৃণা ...প্রভৃতি বাস্তবিক অনুভূতি এবং কাল্পনিক চিন্তা-ভাবনা যা লেখার মধ্যদিয়ে প্রকাশ পাই এবং যা সমাজের হিতে কাজে লাগে তাই সাহিত্য । কিন্তু যারা 'বইয়ের' বাইরে রয়ে গেলেন। যাদের একটা 'কবিতা' কিংবা একটা 'গল্পও' "ছাপা কালির" স্পর্শ পেল না (প্রকাশক ও পত্রিকার সম্পাদকদের আস্থাভাজন তথা সুনজরে না আসার জন্য...), একজন পাঠকেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করল না, কবি বা গল্পকার হিসাবে যাদের কপালে সামাজিক স্বীকৃতি জুটল না। অন্য কোনো 'মাধ্যম' না থাকায় যাদের সৃষ্টি প্রস্ফুটিত হওয়ার আগেই বিনষ্ট হয়ে গেল। কেউ কী হলপ করে বলতে পারবেন সাহিত্যের প্রতি তাদের বিন্দুমাত্র ভালোবাসা বা প্রতিভা ছিল না ? ঠিক এই প্রশ্নটারই উত্তর দিচ্ছেন বর্তমানের ফেসবুকের জনপ্রিয় ও বলিষ্ট লেখক লেখীকারা।যদিও ফেসবুকের লাইক আর কমেন্টের উপর নির্ভর করে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মুড়ি মিছরি হয়ে যায় আর মিছরি মুড়ি হয়ে যায় তবুও প্রকৃত প্রতিভাবানরাই অনেক পত্রিকার সম্পাদক এবং প্রকাশকের কাছ থেকে লেখা পাঠাবার প্রস্তাব পান।ফেসবুকের মতো অতি সহজলভ্য 'ইন্টারনেট মিডিয়ার' মাধ্যমে যাদের 'লেখার' পরিচিতি দেশের সিমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌচ্ছে যাচ্ছে, যারা কবি কিংবা গল্পকার হিসাবে সামাজিক স্বীকৃতি পাচ্ছেন। আগের মতো আর কোনো প্রকার লেখা ধূলো জমে জমে লোক চক্ষুর আড়ালে থেকে বিনষ্ট হয় না। তাই একজন 'পাঠক' হিসাবে আমার মনে হয় ফেসবুক সাহিত্যের পক্ষে ক্ষতিকারক নয় বরং 'অনুঘটক'।

    উত্তরমুছুন